নতুন কোম্পানি খুলবেন তো সবাই আপনাকে স্বাগত জানাবে। কোম্পানি
করবেন মানেই হচ্ছে আপনি বিনিয়োগ করবেন এবং নতুন কর্মসংস্থানের
সুযোগ তৈরি করবেন। যত বেশি কোম্পানি, তত বেশি বিনিয়োগকারী। আর তত
বেশি সরকারের লাভ।
কোম্পানি করার প্রথম ধাপ হচ্ছে নাম নির্বাচন। যে নাম নির্বাচন করলেন,
আগে যাচাই করতে হবে যে সেই নামের কোনো কোম্পানি ইতিমধ্যে আছে কি
না। যে নামে কোম্পানিটি করতে চাচ্ছেন, সেই নামে কোনো কোম্পানি
নিবন্ধিত হয়ে থাকলে আপনাকে নতুন নাম খুঁজতে হবে। একই নামে একাধিক
কোম্পানির নাম নিবন্ধন হতে না দেওয়াই এর উদ্দেশ্য।
এখনই দুই লাখের মতো কোম্পানি আছে দেশে। নতুন কোম্পানির নাম
নিবন্ধন করতে প্রথমেই যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের
কার্যালয়ের (আরজেএসসি) ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে হবে পছন্দের নামটি
দিয়ে কোম্পানি করা যাবে কি না। নামটি যদি একেবারেই নতুন হয় এবং
আরজেএসসি কোনো আইনি সমস্যা না পায়, তবে তারা নামের ছাড়পত্র (নেম
ক্লিয়ারেন্স) দিয়ে দেবে। ছাড়পত্র না পেলে নতুন নাম দিয়ে আবার আবেদন
করতে হবে।
www. roc. gov. bd-এই ওয়েবসাইটে নিজের নামে একটি অ্যাকাউন্ট করে
নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন করার পর একটি
ব্যাংক পেমেন্ট স্লিপ দেওয়া হয় এবং নির্ধারিত ব্যাংকে ৬০০ টাকার সঙ্গে
১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) জমা দিতে হয়। টাকা পরিশোধ করার
পর আবার ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট লগ-ইন করতে হয়। তখন একটি
ছাড়পত্রের সনদ পাওয়া যায়। নামটি ছয় মাস পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকে।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সময় বৃদ্ধির অনুরোধ করলে আরজেএসসি বাড়িয়ে
দেয়।
কোম্পানি নিবন্ধন করতে আরজেএসসির ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য
জমা দিতে হয়। কোম্পানির জন্য তৈরি করতে হয় সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধি।
কোম্পানির উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি সম্পর্কে বর্ণনা থাকে এগুলোতে।
ব্যবসার নাম, ব্যবসার ধরন, অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণও
উল্লেখ থাকে।
কীভাবে কোম্পানি পরিচালক পর্ষদ নির্বাচিত হবে, কোম্পানির সাধারণ সভা
এবং বিশেষ সভা কীভাবে কখন হবে, তারও উল্লেখ থাকবে এতে। কীভাবে
নতুন সদস্য নেওয়া হবে, কীভাবে কোনো সদস্যকে বহিষ্কার করা হবে,
কীভাবে লভ্যাংশ বণ্টন করা হবে ইত্যাদি বিষয়ও থাকবে।
সবকিছু প্রস্তুত করেই আরজেএসসির ওয়েবসাইট থেকে কোম্পানির
নিবন্ধনের আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে হবে এবং ওই আবেদনপত্র
যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। সঙ্গে সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধির মূল কপি ও
অতিরিক্ত দুই কপি, নামের ছাড়পত্রের সনদ, পরিচালকদের তালিকা,
পরিচালকের সম্মতিপত্র দিতে হবে।
আরেজএসসিতে এগুলো জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই হবে। এরপর
কোম্পানির নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট ফি ধার্য করে দেবে। কোম্পানির
অনুমোদিত মূলধনের ওপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট ফি ধার্য হয়ে থাকে
সাধারণত। ব্যাংকে ফি জমা করার পর কাজ শেষ হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
আরজেএসসির কর্মকর্তারা নথি পরীক্ষা করে সন্তুষ্ট হলে ডিজিটালভাবে
স্বাক্ষর করবেন। এরপর সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন, সংঘ স্মারক ও
সংঘ বিধি এবং ফরম ১২ ই-মেইলে পাঠিয়ে দেবে আরজেএসসি। এগুলো পেয়ে
যাওয়া মানেই কোম্পানিটি নিবন্ধিত হয়েছে।
এত দিন পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থাকলেও নতুন করে গত
বছর এক ব্যক্তির কোম্পানি গঠনের জন্যও আইন করা হয়েছে। প্রাইভেট
লিমিটেড কোম্পানি আইনের বিধিবিধান পরিপালন করে পাবলিক লিমিটেড
কোম্পানিতে রূপান্তরিত হতে পারে। আর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির
ক্ষেত্রে ন্যূনতম শেয়ারহোল্ডারের সংখ্যা হতে হয় ৭ জন এবং সর্বোচ্চ
সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়।