- Nahar Complex ( IBBL Buliding ), Room No.11, House- 25/1 ( 1st Floor) , Kotwali , Dhaka- 1100.
- info@lsc-bd.net
অডিট আয়কর আইনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটি আয়কর নথি বিভিন্ন কারণে অডিটে পড়তে পারে। সাধারণত আয়-ব্যয়, সম্পদের ধারাবাহিকতা বা অসামাঞ্জস্যতাই অডিটের পড়ার প্রধান কারণ। আমরা বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে সমগ্র অডিটের পড়ার কারণ নিয়ে তিন পর্বে আলোচনা করবো। আজ থাকছে প্রথম পর্ব।
মো. মনির একজন বাড়িওয়ালা। তিনি প্রতি বছর বাড়িভাড়া বাবদ ১২ লাখ টাকা আয় করেন। সঠিকভাবে কর পরিশোধ করেছেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়কর নথি কর অফিসে জমা করেছেন। কিন্তু তার ফাইল অডিটে পড়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, তিনি তো সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করলেন, তাহলে কেন তার ফাইল অডিটে পড়লো।
যদিও মো. মনির সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করেছেন কিন্তু তিনি আইনানুগ দায়িত্বে অবেহেলা করেছেন। যেমন, তিনি বাড়িভাড়া ব্যাংকে রাখেননি। কোনো ধরনের কোনো হিসাবের খাতা তৈরি করেননি। এছাড়াও তিনি বাড়িভাড়ার চুক্তিপত্রও জমা দেননি। সুতরাং, আয়কর রিটার্ন শুধু জমা দিলেই হবে না, আয়কর রিটার্নের সঙ্গে আয়ের স্বপক্ষে দলিলাদিও জমা দিতে হবে।
মো. বাদশাহ একজন চাকরিজীবী। তিনি বছরে ১০ লাখ টাকা আয় করেন। সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করেছেন এবং পিএফ বাবদ রেয়াত নিয়েছেন। কিন্তু তার ফাইল অডিটে পড়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি তো সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করলেন, তাহলে কেন তার ফাইল অডিটে পড়লো।
যদিও মো. বাদশাহ সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করেছেন কিন্তু তিনি আইনানুগ দায়িত্বে অবেহেলা করেছেন। কারণ, আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে জেনে নেওয়া দায়িত্ব ছিল যে, তার প্রতিষ্ঠানের পিএফ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অনুমোদিত কি না। এছাড়াও মো. বাদশাহর বেতন যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে তার বিবরণী ট্যাক্স অফিসে জমা করেননি। উপরোক্ত কারণে, তার ফাইল অডিটে পড়ে।
মিস ফারিয়া একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাসায় বসে কেকের ব্যবসা করেন। তিনি সঠিকভাবে কর পরিশোধ করেছেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়কর নথি কর অফিসে জমা করেছেন। কিন্তু তার ফাইল অডিটে পড়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, তিনি তো সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করলেন, তাহলে কেন তার ফাইল অডিটে পড়লো।
যদিও মিস ফারিয়া সঠিকভাবে আয়কর পরিশোধ করেছেন কিন্তু তিনি আইনানুগ দায়িত্বে অবেহেলা করেছেন। যেমন, মিস ফারিয়ার প্রধান দায়িত্ব ছিল ট্যাক্স রিটার্নের সঙ্গে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়া। পাশাপাশি ব্যবসার টাকা যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে তার বিবরণী ট্যাক্স অফিসে জমা করা। উপরোক্ত দলিলাদি জমা করলে তার ফাইল অডিটে পড়তো না।
মিস মন্দিরা একজন ছাত্রী। তার কোনো আয়ের উৎস নেই। তিনি বাবার কাছ থেকে দান বাবদ নগদ ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। ১০ লাখ টাকা গ্রহণের বিষয়টি তিনি আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি, তিনি দানের স্বপক্ষে ঘোষণাপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু তার ট্যাক্স ফাইল অডিটে পড়েছে। তিনি ভেবে পাচ্ছেন না যে, কেন তার ট্যাক্স ফাইল অডিটে পড়লো।
যদিও মিস মন্দিরা আয়কর নথিতে দানের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন কিন্তু দান প্রক্রিয়াটি আইনানুগ হয়নি। অর্থাৎ টাকা দান করার কিছু শর্ত আছে। যেমন, দান করার প্রথম শর্ত হলো ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হস্তান্তর। উপরোক্ত ঘটনায় মিস মন্দিরার উচিত ছিল ১০ লাখ টাকা বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করানো। পাশাপাশি, তার নিজের ও বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কপি ট্যাক্স অফিসে জমা দেওয়া।
জাকারিয়া একজন নামকরা ব্যবসায়ী। তিনি গুলশানে থাকেন। তার দামি গাড়ি আছে ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী আছে। তিনি তার আয়ের সঠিক হিসাব দাখিল করেছেন। ব্যবসার আয়-ব্যয়ের হিসাব, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কপি ট্যাক্স রিটার্নের সঙ্গে জমা করেছেন। কিন্তু, তিনি তার ব্যবসা বহির্ভূত ব্যক্তিগত ব্যয় বছরে মাত্র ৬ লক্ষ টাকা প্রদর্শন করেছেন। যদিও তিনি সঠিকভাবে ব্যবসার আয়কর দিয়েছেন ও প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা করেছেন, কিন্তু, তার ট্যাক্স ফাইলটি অডিটে পড়ে।
যদিও সমগ্র বছরের আমাদের ব্যক্তিগত ব্যয়ের হিসাব মনে রাখা সম্ভব নয়, তবু খেয়াল রাখতে হবে ব্যয়ের হিসাব যেন বাস্তবতা বিবর্জিত না হয়। এক্ষেত্রে জাকারিয়া মনগড়া একটি ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই শুধু আয়ের হিসাব দিলেই হবে না, সঙ্গে ব্যয়ের সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore,